মঙ্গলবার, ২১ মার্চ ২০২৩, ০৩:৩২ পূর্বাহ্ন
আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধিঃ আমতলীতে এ বছর বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মধ্যেও বাজারে ধানের দাম ভালো থাকায় খুশি কৃষকরা। কৃষকরা জানান, বাজারে ধানের দাম ভালো থাকায় বেশ লাভবান হওয়ার আশা করছেন তারা। উপজেলা কৃষি অফিসার সিএম রেজাউল করিম বলেন, বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। বাজারে ধানের দামও ভালো। এতে কৃষকরা অধিক লাভবান হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানাগেছে, এ বছর আমতলীতে বোরো চাষের লক্ষমাত্রা ধরা হয়ছিল ২ হাজার ১’শ হেক্টর। কিন্তু ওই লক্ষমাত্রা অর্জিত হয়ে তিন হাজার ৩’শ ১০ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ হয়েছে। বোরো ধান চাষের উপযুক্ত সময় মধ্য কার্তিক থেকে শুরু করে ফাল্গুন মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত। বীজতলা থেকে শুরু করে পাঁচ মাসের মধ্যে উচ্চ ফলনশীল বোরো ধানের ফলন আসে। এ বছর অনাবৃষ্টির কারনে সেচ দিয়ে কৃষককের খরচ বেশী হয়েছে। কিন্তু গত ৫ এপ্রিল ভ্যাপসা গরম হাওয়ায় উপজেলার ২৫ হেক্টর জমির ধান নষ্ট হয়েছে। কিন্তু এতেও উপজেলায় বোরো ধানের বাম্পার ফলনে তেমন সমস্যা হয়নি বলে জানান কৃষকরা। উচ্চ ফলনশীল জাতের বিরি-২৮, বিরি-২৯,বিরি-৪৭ ও বিরি-৬৭, বিরি-৭৪, বিরি-৮৮ ও হাইব্রীড এসএল-৮ এবং ইব্রাহানী-২ ধান চাষ করছে কৃষকরা। বর্তমানে কৃষকরা ধান কাটায় ব্যস্ত সময় পার করছে। এদিকে বাজারে ধানের দাম অনেক ভালো। শুরুতেই বাজারে প্রতিমণ ধান ৯৫০ থেকে ১০০০ টাকা বিক্রি হতো। কিন্তু গত দুই দিন আগে ধানের বাজার মণ প্রতি ১০০ টাকা কমে গেছে। বর্তমান বাজারে চিকন ধান ৮৫০ টাকা এবং মোটা ধান ৭৫০ টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে। এদিকে প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের কারনে বাজারে ধানের দাম নিয়ে কৃষকরা কিছুটা চিন্তিত থাকলেও সরকারের কৃষি পন্য বাজারজাত করনের পদক্ষেপে সেই চিন্তা কেটে গেছে এমনটাই জানালো কৃষকরা। কৃষকরা জানান, এক হেক্টর জমিতে উৎপাদন খরচ ৬০ হাজার টাকা। ওই জমিতে ধান উৎপাদন হয়েছে গড়ে ৬ মেট্রিক টন। বাজারে প্রতিমণ ধান ৭৫০-৮৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সেই হিসেবে ওই জমিতে আয় হবে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা।
বৃহস্পতিবার সরেজমিনে ঘুরে দেখাগেছে, উপজেলার কুকুয়া, হলদিয়া, চাওড়া, আমতলী সদর ও আড়পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে বোরো ধান কাটায় ব্যস্ত সময় পাড় করছে কৃষকরা।
আঠারোগাছিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম সোনাখালী গ্রামের সোহেল রানা বলেন, তিন একর জমিতে বোরো ধানের চাষ করেছি। ফলন ভালো হয়েছে। বাজারে প্রতিমণ ধান ৮০০ থেকে ৮৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারে ধানের দাম ভালো থাকায় স্বস্তিতে কৃষকরা। তিনি আরো বলেন, দু’এক দিনের মধ্যে ধান কাটা শুরু করবো।
কাউনিয়া গ্রামে কৃষক আল আমিন বলেন, ফলন ভালো হয়েছে। বাজারে ধানের দামও ভালো। আশা করি ভালো লাভ হবে।
ঘোপখালী গ্রামের আফজাল শরীফ বলেন, এ বছর বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে এবং বাজারে ধানের দামও ভালো। আশা করি বেশ ভালোই লাভবান হবো।
উপজেলা আড়ৎদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোঃ জাকির হোসেন বলেন, বাজারে মোটা ও চিকন দুই ধরনের ধান রয়েছে। চিকন ৮৫০ এবং মোটা ধান ৭৫০ টাকা মণ ধরে বিক্রি হচ্ছে। করোনা ভাইরাসের প্রভাবের মধ্যেও বাজারে ধানের দাম ভালো। এতে কৃষকরা অনেক লাভবান হবে।
© All rights reserved 2022 © aponnewsbd.com
Leave a Reply