ওমা মা মাগো ঈদে মোরে একটা লাল জামা কিইন্যা দেবা | আপন নিউজ

রবিবার, ০২ এপ্রিল ২০২৩, ০২:৩৫ পূর্বাহ্ন

ওমা মা মাগো ঈদে মোরে একটা লাল জামা কিইন্যা দেবা

ওমা মা মাগো ঈদে মোরে একটা লাল জামা কিইন্যা দেবা

ওমা মা মাগো ঈদে মোরে একটা লাল জামা কিইন্যা দেবা

আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধিঃ ‘ওমা মা মাগো ঈদে মোরে একটা লাল জামা কিইন্যা দেবা। মোরে কিন্তু একটা লাল জামা কিন্যা দেবা’ কথা গুলো বলছিল আর মায়ের কাপরের আঁচল ধরে হাটছিল বেদে পল্লীর শুরভী (৯) নামের একটি মেয়ে। মেয়ের এমন বায়নার কথা শুনে মা খঞ্জনা বেগম নিরুত্তর। কোন কথাই বলছে না সে। এক নাগারে শুধু ঘড়েরর কাজ করে যাচ্ছিল আর কি যেন ভাবছিল। ভাবতে ভাবতে কখন যে নিরবে চোখের জল এসেছির তা তিনি টের পাননি। মেয়ে দেখার আগেই কাপরের আঁচল দিয়ে দ্রæত চোখ মুছে শান্ত হয়ে বললেন মা মারে আমাদের অভাবী সংসারে ঠিক মত খায়োন জোটে না হের মধ্যে কি দিয়া তোর লাল জামা কিন্যা দিমু। কথা গুলো বলছিলেন আর দীর্ঘশাস ফেলছিলেন মা খঞ্জনা বেগম। শুরভির মত শুভ, লিপু , তরিকুল, রোকেয়াসহ আরো অনেক শিশু রয়েছে এই বেদে পল্লীতে তারা কখন ঈদ আসে আর কখন ঈদ যায় তা তারা টের পায় না।
জানা গেছে, অভাবের তারানা এবং পেশাগত কারনে গত ২ বছর ধরে আমতলী পানি উন্নয়ন বোর্ডের অফিস কম্পাউন্ডের মধ্যে পলিথিন টানিয়ে অস্থায়ী ঝুপরি ঘড় বানিয়ে বসবাস করছেন মুন্সিগঞ্জ জেলার লৌহগঞ্জ উপজেলার মুচ্ছা পাড়া গ্রামের ৬টি বেদে পরিবার। গ্রামের বাড়ীতে তাদের বসত বিঠা ছাড়া আর কিছু নেই। তাই তারা নিরুপায় হয়ে সেখানে তারা যান না। বেদে বহরের সবুজ জানান, গত বছর এবং চলতি বছর মহামারি করোনার লক ডাউনের কারনে আমরা কাজের জন্য কোথায় বের হতে পারি না। দিনের কামাই দিনে করতে না পারলে কপালে খাওয়া জোটে না। তাই প্রায়ই আমাদের অর্ধহারী অনাহারী অবস্থায় দিন কাটাতে হয়।
তিনি আরো বলেন, গত বছর করোনা কালীন সময়ে লক ডাউনের সময় স্থানীয় বেসরকারী সংগঠনে এনএস এস আমাদের প্রতি পরিবারকে প্রতি সপ্তাহে ৫ টাকা কেজি দরে ৫ কেজি করে চাল দিয়েছিল ৬ মাস ধরে। তাতে আমাদের কিছুটা প্রাণ বাঁচলেও এবছর সহযোগিতার জন্য এখনো কেউ এগিয়ে আসেনি। তাই খুব অসুবিধার মধ্যে আছি।
কি দিয়া আমার ঈদ করমু আর কি দিয়া পোলা মাইয়ার সখ মিটাবো এই চিন্তায় এহন মোরা অস্থির।
বেঁদে পল্লীর বেদে রোকেয়া বেগম বলেন, মোগো আবার গরীব মানুষের ঈদ। ঠিক মত খাইতে পারি না। পোলাডায় একটা জামার জন্য বায়না ধরছে নিজেরে যেহানে ঠিক মত খাইতে পারি না হেহানে কি দিয়া জামা কিন্যা দিমু কন দেহি স্যার।
মারুতা নমের এক বেদে জানান, করোনার এই লক ডাউনের মধ্যে গ্রামে গেলে তারা খারাপ খারাপ কথা কয়। কোন কামাই নাই। চেয়ারম্যান মেম্বারেগো কাছে গেলে হেরা কয় তোমরা এই দেশী না তোমরা এখানে ভোটার না তোমাগো কিছু দেওয়া যাইবে না বলে মোগো তারাইয়া দেয়। তিনি আরো বলেন মোরা কি খাইয়া বাঁচমু হেই চিন্তায় আছি ঈদ অ মোগো ভাইগ্যে নাই।
বেসরকারী সংগঠন এনএসএস এর নির্বাহী পরিচালক শাহাবুদ্দিন পান্না বলেন, এই নিরুপায় মানুষের জন্য বিত্তবানদের সহযোগিতার হাত বারানো উচিত।
আমতলী পৌরসভার মেয়র মো. মতিয়ার রহমান বলেন, অসহায় এই বেঁদে বাসীদের জন্য করোনা কালীন সময়ে খেয়ে পরে বাঁচার জন্য সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান বলেন, সরকারের মানবিক সহায়তা থেকে এদের বাঁচার জন্য সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।

আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published.




© All rights reserved 2022 © aponnewsbd.com

Design By MrHostBD
error: সাইটের কোন তথ্য কপি করা নিষেধ!!