ঘূর্ণিঝড় ইয়াস; গলাচিপায় ৩০ গ্রাম প্লাবিত, বেড়ি বাঁধে ভাঙন | আপন নিউজ

মঙ্গলবার, ২১ মার্চ ২০২৩, ১২:৪৩ পূর্বাহ্ন

প্রধান সংবাদ
গলাচিপায় বিটিএফ স্কুলের শতভাগ বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের এমপির সংবর্ধনা গলাচিপায় কালবৈশাখী আতঙ্কে তরমুজ চাষিরা তালতলীতে প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার ঘর-জমি পাচ্ছেন ৩০ জন ভূমিহীন ও গৃহহীন বামনা উপজেলা ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা বুধবার কলাপাড়া আইনজীবী কল্যাণ সমিতির নাথুরাম সভাপতি, আনোয়ার সম্পাদক নির্বাচিত গলাচিপায় অবশেষে বিয়ে করলেন আরিফ-মারিয়া গলাচিপায় আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় জমিসহ গৃহ উদ্বোধন বিষয়ে ইউএনও’র প্রেস ব্রিফিং এসো মিলি ইতিহাসের আঙিনায় স্মৃতিমন্থনে জেলার শ্রেষ্ঠ থানা মহিপুর, শ্রেষ্ঠ ওসি আবুল খায়ের গলাচিপায় ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি বিষয়ে গনসচেতনতা মূলক মাঠ মহড়া
ঘূর্ণিঝড় ইয়াস; গলাচিপায় ৩০ গ্রাম প্লাবিত, বেড়ি বাঁধে ভাঙন

ঘূর্ণিঝড় ইয়াস; গলাচিপায় ৩০ গ্রাম প্লাবিত, বেড়ি বাঁধে ভাঙন

ঘূর্ণিঝড় ইয়াস; গলাচিপায় ৩০ গ্রাম প্লাবিত, বেড়ি বাঁধে ভাঙন
সঞ্জিব দাস, গলাচিপাঃ ঘূর্ণিঝড় ইয়াস ও পূর্ণিমায় উপকূলীয় গলাচিপায় প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার বিকেল (বিকেল ৫টা) পর্যন্ত থেমে থেমে দমকা বাতাস বইছে। পাশাপাশি কখনো কখনো ঝড়ো হাওয়ার সাথে মুসল ধারে বৃষ্টি হচ্ছে। নদীতে স্বাভাবিকের চেয়ে তিন থেকে চার ফুট পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে গলাচিপা পৌর এলাকার বেড়ি বাঁধের বাইরে থাকা ছয়টি ওয়ার্ডের আংশিক জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে। এ ছাড়া উপজেলার অন্তত ৩০ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। জলোচ্ছ্বাসে ওয়াবদা বেড়িবাঁধের বাইরের গ্রাম ও বাড়িঘর তলিয়ে গেছে। নদীতে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে বেশি পানি হওয়ায় ঘূর্ণিঝড় ইয়াস আতঙ্কে রয়েছে সাধারণ মানুষ।প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, পানপট্টি ও রতদনদীতালতলীর প্রায় সাদে পঁচ শ ফুট ওয়াবাদা বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন রাস্তাঘাটের ক্ষতি হয়েছে। উপজেলা প্রশাসন ক্ষতিগ্রস্ত বেড়ি বাঁধ জরুরিভাবে জিও ব্যাগ দিয়ে ভাঙন রোধের চেষ্টা করে যাচ্ছেন। উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয়দের সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।গলাচিপা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা এস এম দেলোয়ার হোসাইন জানান, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরণের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। মাঠ পর্যায়ের খবর আসার সাথে সাথে আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। দুপুরের দিকে জলোচ্ছ্বাসে পানপট্টি ইউনিয়নের বোর্ড স্কুলের কাছের বেড়ি বাঁধের প্রায় ১৫০ ফুট ভেসে গেছে। এ ছাড়া রতনদী তালতলী ইউনিয়নের গ্রামর্দ্দন এলাকার বেড়ি বাঁধের প্রায় ৫০০ ফুট ফাটল ধরেছে। রাতে জলো”চ্ছ্বাস হলে এ বাঁধটিও ভেসে যেতে পারে। তাই বিকেল থেকেই দুটি পয়েন্টে জিও ব্যাগের মাধ্যমে বালুর বস্তা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। রাতে যদি জলোচ্ছ্বাস বেশি হয় তাহলে দুর্গত মানুষদের সাইক্লোন শেল্টারে নেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। এজন্য প্রয়োজনীয় টিম আলাদা আলাদাভাবে কাজ করছে। গলাচিপা পৌর ১নম্বর ফেরিঘাটের তালবনগর আবাসনের বাসিন্দা মো. সানু মিয়া বলেন, সকাল ১০টার পরই আমাগো আবাসনে পানি উঠতে শুরু করে। ঘরের মালামাল কই রাখমু আর আমরা কই যামু কিছুই কইতে পারছি না। এহন যে যেমন কইররা পারছি মালামাল সরাচ্ছি। রাইতে কী অইবে জানি না।
রতনদী তালতলী ইউনিয়নের বদনাতলী এলাকার ওয়াবদা বেড়ি বাাঁধের বাইরে বসবাসরত বাসিন্দা নুরুল ইসলাম মাতব্বর বলেন, ‘আমাগো বাড়ির সামনের রাস্তা দিয়া একটু আগেও বাড়ি আইছি। এক ঘণ্টার মধ্যেই রাস্তা পানিতে তলাইয়া তুফানে ভাইঙ্গা যাইতে আছে। এহন ভয়ে আমাগো ঘরের মালামাল ওয়াবদার (বেড়ি বাঁধের) ভিতরে এক আত্মীয়ার ঘরে রাখছি। রাইতে পানি বেশি দেখলে চইল্লা যামু।এ বিষয় গলাচিপা উপজেলা নির্বাহী অফিসার আশীষ কুমার বলেন, পৌরসভাসহ ওয়াবদা বেড়ি বাঁধের বাইরে বসবাস করা মানুষ বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আমরা সাধারণ মানুষদের সতর্ক করছি, যদি আবহাওয়া খারাপ হয় এবং পানি বৃদ্ধি পায় তাহলে তাদেরকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হবে। কন্ট্রোল রুমের মাধ্যমে আমরা পৌরসভাসহ সকল ইউনিয়নে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করছি। আগাম সব ধরণের প্রস্তুতি রয়েছে।
গলাচিপা পৌর মেয়র আহসানুল হক তুহিন বলেন, জলোচ্ছ্বাসে গলাচিপা পৌর এলাকার ছয়টি ওয়ার্ডের ওয়াবদা বেড়ি বাঁধের বাইরের অংশ পানিতে তলিয়ে গেছে। আমরা দীর্ঘদিন ধরে দাবি করে আসছি ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলো চিহ্নিত করে রিং বেড়ি বাঁধ নির্মাণ করার জন্য। নদীতে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে পানি বেশি হলেই ১,২,৩,৪,৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের আংশিক তলিয়ে যায়। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় ব্যবসায়ীরা। একটি রিং বেড়ি বাঁধ হলে এ সমস্যার সমাধান হতো। এ ছাড়া আমরা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ অনুযায়ী সতর্ক রয়েছি। রাতে জোয়ারের পানি বেশি হলে এসব এলাকার লোকজন নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হবে।এ প্রসঙ্গে গলাচিপা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাহিন বলেন, মঙ্গলবার দুপুরের জলোচ্ছ্বাসেই গলাচিপা উপজেলার বিভিন্ন বেড়ি বাঁধ ও রাস্তা ঘাটের ক্ষতি হয়েছে। উপজেলায় বেড়ি বাঁধের বাইরে প্রায় ২৫ হাজার মানুষ রয়েছে। এ সকল মানুষকে নিরাপদ রাখার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছ। এ ছাড়া এখন পর্যন্ত কোনো জান মালের ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। আমরা উপজেলা পরিষদ ও উপজেলা প্রশাসন সক্রিয় রয়েছি। বাঁধ ভেঙে বা বাঁধের ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হলে সেখানে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published.




© All rights reserved 2022 © aponnewsbd.com

Design By MrHostBD
error: সাইটের কোন তথ্য কপি করা নিষেধ!!