শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:২৬ পূর্বাহ্ন
রিপোর্ট: বিশ্বাস শিহাব পারভেজ মিঠুঃ
কলাপাড়া উপজেলার রাবনাবাদ চ্যানেলের মোহনা সংলগ্ন লালুয়া ইউনিয়নের চরচান্দুপাড়া গ্রামটির অবস্থান। এই গ্রামের দুই শাতাধিক কৃষি এবং জেলে পরিবারের মানুষ সামাজিক ভাবে ঐক্যবদ্ধ ভাবে বসবাস করে আসছে যুগযুগ ধরে। এখানকার বাসিন্দারা ভয়ঙ্কর রাবনাবাদ নদের সর্বগ্রাসী ভাঙ্গনে ভিটেবাড়ি হারিয়ে মানষিক ভাবে যতটা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে তার চেয়ে বেশি যন্ত্রনা এবং সামাজিক ভাবে নিরাপত্ত হীনতায় ভুগছেন বলে অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগি এলাকাবাসী। সামাজিক এমন পরিস্থিতি সৃষ্টিকারি ব্যক্তিটি হচ্ছেন মোসাঃ কুলসুম বেগম নামের এক বিধবা হিং¯্র মানষিকতার নারী। অতিষ্ঠ গ্রামবাসি প্রতিকার চেয়ে লিখিত ভাবে অভিযোগ দায়ের করেছে উপজেলা প্রশাসনের কাছে।
সরেজমিন গিয়ে দেখাগেছে, লালুয়া ইউনিয়নের ৪৭/৫ নং পোল্ডারের বেড়িবাঁধের বাইরের অংশে একটি টিনের ঘর তুলে বসবাস করেন আট বছর আগে মৃত্য মুকুল তালুকদারের বিধবা স্ত্রী মোসাঃ কুলসুম বেগম। এই কুলসুম বেগমের মাধ্যমে সামাজ বদ্ধ এবং শৃঙ্খল বদ্ধভাবে বসবাসের মাঝে মোসাঃ কুলসুম বেগমের নানাবিধ নির্যাতন, লা না এবং হয়রানীর শিকার হয়ে অতিষ্ট হয়ে উঠেছেন চরচান্দুপাড়া গ্রামের শিশু,বৃদ্ধ, নারী-পুরুষ সকলেই। নির্যাতনের শিকার শিশু শিক্ষার্থী মো. হালিম জানায়, তাকে বিদ্যালয়ে যাওয়ার পথে বাধ্য করে ওই নারীর সংসারিক কাজ করে দেওয়ার জন্য। না করলেই মারধরসহ নানা হুমকি প্রদান করে। সেখানে উপস্থিত চরচান্দুপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেনীর শিক্ষার্থী মাহিনুর বলে, কুলসুম বেগম তাকে দিয়ে তার পা চাটিয়েছে এবং তার সাংসারিক কাজ করতে বাধ্য করিয়েছে। সে অনেক খারাপ মহিলা। স্থানীয় ঝালমুড়ি বিক্রেতা মো. কালাম মালকার বলেন ‘এক মাস আগে ঝালমুড়ির ১০ টাকা চাইতে গেলে সে তাকে জুতোপিটা করার হুমকি দিয়ে তাড়িয়ে দেয়। স্থানীয় প্রতিবেশী মো.জয়নাল কাড়াল বলেন, কিছুদিন পূর্বে একটি পুরুষ সহ তাকে কলাপাড়া থানা পুলিশ গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। মানষিক ভারসাম্যহীন আঃ রাজ্জাক নামের ওই পুরুষটিকে জোড়পূর্বক সপ্তাহ ব্যাপী আটকে রেখে অসামাজিক কার্যকলাপ করে আসছিলো এমন অভিযোগ ওই এলাকাবাসীর।
স্থানীয়দের লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানাগেছে, মরহুম শাহজাহান হাওলাদারের বিধবা কন্যা কুলসুম বেগম দির্ঘদিন ধরে অসামজিক কার্যকলাপ পরিচালনা করছে তার ঘরে বসে। যার ফলে স্থানীয় যুব সমাজ এবং স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা বিপদগ্রস্থ হচ্ছে। কুলসুম বেগমের অসামাজি কার্যকলাপের বাঁধা প্রদান করলে মিথ্যা ধর্ষণ মামলাসহ বিভিন্ন মামলার আসামী করে দাবিয়ে রাখে। ইতিপূর্বে হয়রানী মূলক মিথ্যা মামলার শিকার হয়েছেন অনেকেই। বুদ্ধ আলহাজ্ব ঝরিম চৌধুরী, সুলতান সিকদার, দোকানদার ইউনুছ মাল, বেল্লাল গাজী, মোসাঃ হেলেনা বেগম, মমতাজ বেগম, তারাভানু, ৮নং ওয়ার্ড আওয়ামীলী নেতা রিপন মোল্লা, এসকেজেবি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থী ইমন হাং, হনুফা বেগম, অঅক্কাস হাওলাদারসহ শতাধীক জনগন লাি ত ও হয়রানী মূলক মামলার আসামী হয়েছেন। মৎস্যজীবী আক্কাস হাওলাদার বলেন, এই মহিলার জন্য এলাকার ছাত্র ও যুব সমাজসহ গৃহবধূরা বিপদগামী হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট আইন প্রয়োগকারী সংস্থার মানবিক হস্তক্ষেপের মাধ্যমে অপসারনের দাবীতে সোচ্চার হয়ে উঠেছে এলাকাবাসী। কুলসুম বেগমের কারনে স্থানীয় বাসিন্দারা মানষিক এবং শারীরিক ভাবে লাি ত হচ্ছে প্রতিদিন। কুলসুম বেগমের নির্যাতন এবং অসামাজি কর্মকান্ডের জন্য তাকে গ্রাম থেকে অন্যত্রে স্থানান্তরের দাবিতে লালুয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়াম্যানকে অবহিত করার সঙ্গে সঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করে।
অভিযুক্ত মোসাঃ কুলসুম বেগম মুঠো ফোনে বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমি কোন অসামাজিক কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত না। আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে স্থানীয়রা। ৮নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য মোঃ জাফর বলেন, কুলসুম ইতিপূর্বে এলাকার লোকজনকে অযথা হয়রানীর গ্যারাকলে ফেলেছে। এলাকার সামাজিক পরিবেশ সুস্থ রাখার তাগিদে তাকে অন্যত্র বসবাসের ব্যবস্থা করে দেয়া হলে এলাকাবাসী সস্তিতে বসবাস করতে পারবে। এব্যাপারে লালুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শওকত হোসেন তপন বিশ্বাস জানায়, চরচান্দুপাড়া গ্রামের ভুক্তভোগি জেলে এবং কৃষক পরিবারের মানুষ আমাকে মৌখিক ভাবে অবহিত করেছে। বেপরোয়া ওই নারীর বিরুদ্ধে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে গ্রামবাসির শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহন করার জন্য উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করছি।
© All rights reserved 2022 © aponnewsbd.com
Leave a Reply