বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৩:৫৬ পূর্বাহ্ন
আমতলী প্রতিনিধিঃ আমতলী উপজেলা দক্ষিণ তক্তাবুনিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোঃ মনিরুল ইসলাম বাবুল খানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্কুল ও মাদ্রাসার নিয়োগের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তার এমন কর্মকান্ডে অতিষ্ঠ শিক্ষকরা। দ্রুত তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
জানাগেছে, উপজেলার দক্ষিণ তক্তাবুনিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হিসেবে গত ২০১০ সালে নিয়োগ পায় বাবুল খাঁন। ওই নিয়োগের পর থেকে তিনি বিভিন্ন বিদ্যালয় ও মাদ্রাসায় কাম্য যোগ্যতা না থাকলেও নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে আবেদন করেন। ওই আবেদনের বিভিন্ন দ্রæটি ধরেই তিনি আদালতে মামলা দায়ের করেন। এরপর তিনি বিদ্যালয় ও মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ ও ভুক্তভোগীদের হয়রানী করতে মোটা অংকের টাকা দাবী করেন। ওই টাকা না দিলে তিনি মামলা চালিয়ে শিক্ষকদের হয়রানী করেন এমন অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। উত্তর সোনাখালী স্কুল এন্ড কলেজে প্রধান শিক্ষক পদে বিজ্ঞপ্তি মোতাবেক কাম্য যোগ্যতা না থাকা সত্তে¡রও মনিরুল ইসলাম বাবুল প্রধান শিক্ষক পদে আবেদন করেন। ওই বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তার আবেদন বাতিল করে দেন। এরপর তিনি আমতলী সহকারী জজ আদালতে দেওয়ানী মামলা দায়ের করেন। ওই মামলার কারনে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ পাওয়া ইউসুফ আলীর বেতন-ভাতা গত ৪ বছর ধরে বন্ধ ছিল। পরে তিনি প্রধান শিক্ষক ইউসুফের কাছে পাচ লক্ষ টাকা দাবী করেন। তার দাবীকৃত টাকার তিন লক্ষ টাকা তিনি পরিশোধ করেন। অবশিষ্ট টাকা না দেয়ার তিনি মামলা তুলে নেয়নি। একইভাবে গাজীপুর বন্দর মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কাঠালিয়া দাখিল মাদ্রাসায় নিয়োগে তার লোকজন দিয়ে মামলা করে শিক্ষক ও নিয়োগ বোর্ড কর্তৃপক্ষকে হয়রানী করছেন এমন অভিযোগ কাঠালিয়া মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি মাহবুবুর রহমানের। সহকারী শিক্ষক মনিরুল ইসলামের এমন কর্মকান্ড বন্ধের জন্য প্রশাসনের কাছে দাবী জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
কাঠালিয়া গ্রামের সোহরাফ মাতুব্বর ও রাওঘা গ্রামের মনিরুল ইসলাম বলেন, মনিরুল ইসলাম বাবুল খান মানুষকে হয়রানী করতেই মিথ্যা অভিযোগ তুলে মামলা দিচ্ছে। তার এমন কর্মকান্ডে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ। দ্রæত তার বিরুদ্ধে প্রশাসনকে ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানান তারা।
কাঠালিয়া দাখিল মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত সুপার মাওলানা আব্দুল লতিফ বলেন, সুপার নিয়োগ পরীক্ষায় মনিরুল ইসলাম বাবুল খ্ান দুই লক্ষ টাকা দাবী করেন। ওই টাকা না দেয়ায় তিনি তার লোক দিয়ে আমাকে ও মাদ্রাসার সভাপতিকে হয়রানী করতে অভিযোগ দিয়েছে।
সোনাখালী স্কুল এন্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক মোঃ ইউসুফ আলী বলেন, কাম্য যোগ্যতা না থাকা সত্তে¡ও মনিরুল ইসলাম প্রধান শিক্ষক পদে আবেদন করেছেন। ওই আবেদন স্কুল এন্ড কলেজ কর্তৃপক্ষ বাতিল করে দেয়। কিন্তু এর বিরুদ্ধে মনিরুল ইসলাম বাবুল আমতলী সহকারী জজ আদালতে দেওয়ানী মামলা করেছেন। তিনি আরো বলেন, ওই মামলা তুলে নিতে তিনি ৫ লক্ষ টাকা দাবী করেন। আমি নিরুপায় হয়ে তিন লক্ষ টাকা তাকে দিয়েছি। কিন্তু দুই লক্ষ টাকা না দেয়ায় তিনি মামলা তুলে নেয়নি।
সোনাখালী স্কুল এন্ড কজেলের সভাপতি মোঃ নজরুল ইসলাম বলেন, মনিরুল ইসলাম বাবুল খাঁন আমার বন্ধু। প্রধান শিক্ষক ইউসুফ আলীর সঙ্গে যে ঝামেলা ছিল তা মিটিয়ে দিয়েছি।
কাঠালিয়া দাখিল মাদ্রাসার ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মোঃ মাহবুবুর রহমান বলেন, মাদ্রাসার সুপার নিয়োগের বিরুদ্ধে মনিরুল ইসলাম বাবুল তার সহযোগী সরোয়ার হাওলাদার ও বেল্লাল মাদবর বরগুনা জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ দিয়েছিল। ওই অভিযোগ তদন্তে মিথ্যা প্রমানিত হয়েছে।
মনিরুল ইসলাম বাবুল খাঁন সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমার বিরুদ্ধে একটি মহল ষড়যন্ত্র করে মিথ্যা অভিযোগ তুলেছে। কিন্তু সোনাখালী স্কুল এন্ড কলেজের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি সদুত্তর দিতে পারেনি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আশরাফুল আলম বলেন, মনিরুল ইসলাম বাবুল খাঁনের বিষয়টি আমি জেনেছি। সঠিক অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
© All rights reserved 2022 © aponnewsbd.com
Leave a Reply