মঙ্গলবার, ১৭ Jun ২০২৫, ১১:৩৪ পূর্বাহ্ন
আমতলী প্রতিনিধিঃ বরগুনার আমতলী উপজেলার আমতলী সদর ইউনিয়ন শ্রমিকদল সাধারণ সম্পাদক পল্লী চিকিৎসক মোঃ শাহীন খাঁনকে নির্যাতন করে হত্যার ঘটনায় জড়িতদের হত্যার বিচার দাবীতে বৃহস্পতিবার মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করা হয়েছে। উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠন ও সর্বস্তরের জনতার উদ্যোগে এ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করা হয়। ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলে সহ্রাধিক বিএনপির নেতাকর্মী ও নারীরা অংশ নেয়। বিক্ষোভ মিছিলটি উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণ থেকে শুরু করে থানায় সামনের সড়ক হয়ে সাকিব প্লাজায় শেষ হয়। পরে উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে মানববন্ধন করা হয়।
জানাগেছে, আমতলী উপজেলার সদর ইউনিয়ন শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক পল্লী চিকিৎসক শাহীন খাঁনকে খুরিয়ার খেয়াঘাট এলাকার জালাল ফকিরের স্বমিলের ভাড়াটিয়া মালিক কাজল মৃধা গত রবিবার রাত আড়াইটার দিকে রোগী দেখার কথা বলে ডেকে নেয়। পরে আমতলী-কুয়াকাটা মহাসড়কের সাকিব খাঁনের বাসার পাশে নিয়ে তাকে কাজল মৃধা,ইসাহাক মৃধা ও জালাল ফকিরের বাসার ভাড়াটিয়া শাহারুলসহ ৮-১০ জন মারধর করে। গত সোমবার বেলা ১১ টার দিকে আহত শাহীন খাঁনকে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। ওই হাসপাতালের চিকিৎসক ডাঃ হুমায়ুন আহমেদ সুমন তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে প্রেরণ করেছেন। ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওইদিন রাত ৮ টার দিকে তিনি মারা যান। এদিকে ওইদিন রাত দুইটার দিকে শাহীন খানের মরদেহ আমতলী থানায় নিয়ে আসে। শাহীন খাঁনের ছেলে বায়েজিদ খাঁন চয়নের অভিযোগ আমতলী থানায় ওসি মোঃ আরিফুল ইসলাম আরিফকে লাশের ময়না তদন্ত করানো ও মামলা নেয়ার অনুরোধ করলে তিনি মামলা নেয়নি। উল্টো তাকে এ নিয়ে বাড়াবাড়ি করতে নিষেধ করেছেন এবং দ্রæত লাশ দাফনের নির্দেশ দেন। শাহীন খাঁন হত্যার বিচার দাবীতে বৃহস্পতিবার বেলা ১১ টার দিকে আমতলী উপজেলা বিএনপি, অঙ্গ সংগঠন ও সর্বস্তরের জনতার উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করা হয়। আমতলী উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব তুহিন মৃধার সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন বরগুনা জেলা শ্রমিকদল সভাপতি নাশির মোল্লা, সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. রুহুল আমিন, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক অ্যাড, নাশির উদ্দিন তালুকদার, মকবুল আহম্মেদ খান, পৌর বিএনপির সভাপতি জালাল উদ্দিন খান, উপজেলা ছাত্রদল সভাপতি সোয়েব ইসলাম হেলাল, সাধারণ সম্পাদক ইমরান খান ও সদর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি জালাল মৃধা প্রমুখ ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, আমতলী সদর ইউনিয়ন শ্রমিকদল সাধারণ সম্পাদক নিহত শাহীন ঁখান একজন দলের নিবেদিত কর্মী ছিলেন। তাকে দলীয় কোন্দলের বলি হতে হয়েছে। সন্ত্রাসী কাজল মৃধা, ইসাহাক মৃধা ও শাহারুলসহ যারা নির্যাতন করে হত্যা করেছে তাদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনে শাস্তি দাবী করেছেন তারা। পুলিশকে দ্রæত তদন্ত সাপেক্ষে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনার দাবী জানিয়েছেন বক্তরা।
প্রত্যক্ষদর্শী সাকিব খাঁন বলেন, ঘটনার দিন রবিবার রাত তিনটার দিকে আমার বাড়ীর একটু সামনে ডাকাডাকির শব্দ শুনতে পাই। পরে আমি ঘর থেকে বের হই। আমার আসার শব্দ পেয়ে কিছু লোক দৌড়ে পালিয়ে যায়। আমি এসে দেখি কাজল মৃধা আমার চাচা শাহীন খাঁনকে লাথি দিয়ে রাস্তার পাশে ফেলে দিচ্ছে এবং লাঠি দিয়ে পিটান দেয়। আর পাশে জালাল ফকিরের বাসার বাড়াটিয়া শাহারুল ও তার স্ত্রী দাড়িয়ে আছে। কাজল মৃধা ও তার সহযোগীদের নির্যাতনে আমার চাচা মারা গেছেন।
নিহত শাহীন খাঁনের স্ত্রী শিউলী বেগম কান্নাজনিত কন্ঠে বলেন, রাতে আমার স্বামী আমাকে এসে বলেছেন তাকে কাজল মৃধা ও তার সহযোগীরা মারধর করেছে। আমি ওদেরকে ছাড়বো না। তিনি আরো বলেন, উপজেলা বিএনপির এক প্রভাবশালী নেতার নির্দেশে আমার স্বামীকে পরিকল্পিতভাবে কাজল মৃধা ও তার সহযোগীরা নির্যাতন করে হত্যা করেছে। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।
আমতলী থানার ওসি মোঃ আরিফুল ইসলাম আরিফ বলেন, শাহীন খান হত্যার ঘটনায় মানববন্ধন ও বিক্ষোভের বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা। আমাকে কেউ এ বিষয়ে জানায়নি।
© All rights reserved 2022 © aponnewsbd.com
Leave a Reply