বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:৫১ অপরাহ্ন
সঞ্জিব দাস, গলাচিপাঃ
গলাচিপায় বয়সের ভারে শরীর আর চলে না। শরীরের গঠন জীর্নশীর্ণ। দেখলে বোঝা যায় রোগ শোকে অনেকটা ক্লান্ত তিনি। বয়স তার ৬৭ বছর। খেয়ে না খেয়ে বেঁচে আছেন হত দরিদ্র সিরাজ মাঝি (সিরু)। এ অবস্থায় দুমুঠো খাবার জোগাড় করতে রাস্তায় নেমেছেন তিনি। প্রতিদিনের ন্যায় আজও ভ্যান নিয়ে রাস্তায় থাকেন তিনি। এরই মধ্যে শুরু হল বৃষ্টি। বৃষ্টিতে ভিজে দোকান থেকে মানুষের মালামাল বাড়িতে বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে আসেন তিনি। সিরাজ মাঝি হচ্ছেন উপজেলার রতনদী তালতলী ইউনিয়নের উলানিয়া ছয় আনি গ্রামের মৃতঃ ফজলে করিম মাঝির ছেলে। সিরাজ মাঝি জানান, ৫০ বছর পর্যন্ত ভ্যান গাড়ি পায়ে চালিয়ে মানুষের দোকান থেকে মালামাল বাড়িতে পৌঁছে দেই। সেখান থেকে যেটুকু পারিশ্রমিক পাই তা দিয়েই স্ত্রী সন্তান নিয়ে দুমুঠো খেয়ে বেঁচে আছি। এখন শরীরে আগের মত শক্তি নাই তাই তেমন আয় ইনকাম হয় না। তিনি আরও জানান, আমার জীবনের প্রথম মাল টানি গলাচিপা কনক স্টিল আলমারীর। তার মালিক ছিলেন গলাচিপা সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের প্রধান প্রভাষক মো. সোহরাব হোসেন। দীর্ঘ ৩০ বছর পর্যন্ত তার মালামাল আমার ভ্যান দিয়ে মানুষে কাছে পৌঁছে দেই। সারাদিন রাস্তায় কাজ করে রাতে যখন বালিসে মাথা দিয়ে শুতে যাই তখন বৃষ্টি এলেই আমার মরণ হয়। থাকতে হয় অন্যের ঘরে। কেননা ঘরে বসেই আমি শুয়ে চান বসে চান দেখতে হয়। এ বিষয় নিয়ে সিরাজ মাঝির স্ত্রী কহিনুর বেগম বলেন, আমার শ^শুরের জমি আমাদের এলাকার সিদ্দিক খা, ইদ্রিস খা, আনোয়ার খা, কবির খার কাছে বিক্রি করেন। আমার স্বামী সিদ্দিক খা, ইদ্রিস খা, আনোয়ার খা, কবির খা এর সাথে কথা বলে কিছু জমি আমরা তাদের কাছ থেকে আবার ক্রয় করি। জমিটির বুঝ না পাওয়ায় ঘর তুলতেও পারি না, আর কোন ব্যক্তি আমাদের পাশে থেকে গরীবদের সহানুভূতিও দেখায় না। তাই আমরা অনেক বিপদে আছি। এ বিষয় নিয়ে ইউপি সদস্য মোতাহার সরদার বলেন, আসলেই সিরাজ মাঝি অসহায় একজন মানুষ, ৫ ছেলে ও ২ মেয়ে নিয়ে অনেক কষ্টে আছে। ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম মস্তফা খান বলেন, বিষয়টি নিয়ে অনেকবার বসা হয়েছে। আসলেই সিরাজ মাঝি অসহায় মানুষ। সরকারি কোন ত্রাণ এলেই আমি তার ঘরে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করব।
© All rights reserved 2022 © aponnewsbd.com
Leave a Reply