রবিবার, ০১ অক্টোবর ২০২৩, ০৫:১৯ পূর্বাহ্ন
আপন নিউজ প্রতিবেদক বরগুনাঃ তালতলী উপজেলার পঁচাকোড়ালিয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের আওয়ামীলীগ দলীয় মনোনয়নে তৃণমুল ভোটে সাবেক শিবির নেতা মোঃ আব্দুর রাজ্জাক হাওলাদারের কাছে আওয়ামীলীগ নেতা মোঃ আবু জাফর খোকন হাওলাদার পরাস্থ হয়েছেন। শিবির নেতা মনোনয়ন পেতে তৃণমুল ভোটারদের টাকার বিনিময়ে ভোট কিনে বিজয়ী হয়েছেন এমন অভিযোগ দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী শামীম পাটোয়ারী। দলীয় শৃংখলা রক্ষায় দ্রুত কার্যকরী ব্যবস্থা নিতে জেলা ও কেন্দ্রিয় নেতাদের কাছে দাবী জানিয়েছেন তিনি।
জানাগেছে, তালতলী উপজেলার ছয়টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন আগামী ১৫ জুন। ওই নির্বাচনে আওয়ামীলীগ দলীয় প্রার্থী মনোনয়নে পঁচাকোড়ালিয়া ইউনিয়নের তৃণমুল নেতাদের নিয়ে তালতলী উপজেলা আওয়ামীলীগ শুক্রবার দলীয় কার্যালয়ে প্রাক ভোটের আয়োজন করেন। পঁচাকোড়ালিয়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সভাপতি মোঃ আবু জাফর খোকন হাওলাদার, সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম বাবুল পাটোয়ারী, সাবেক শিবির নেতা বর্তমানে উপজেলা আওয়ামীলীগ সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ আব্দুল রাজ্জাক হাওলাদার, উপজেলা যুবলীগ যুগ্ম আহবায়ক মোঃ শামীম পাটোয়ারী ও প্রায়াত ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা নজির হোসেন কালু পাটোয়ারীর ছেলে শাহীন পাটোয়ারী দলীয় মনোনয়ন পেতে ফরম সংগ্রহ করেন। উপজেলা কমিটির কাছে পাঁচ মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে মোঃ শামীম পাটোয়ারী ও শাহীন পাটোয়ারী ও রেজাউল করিম বাবুল পাটোয়ারী দলীয় শৃংখলা রক্ষার্থে শিবির নেতা আব্দুর রাজ্জাক হাওলাদারকে বাদ দিয়ে চারজনের নাম জেলা কমিটির মাধ্যমে কেন্দ্রিয় কমিটিতে পাঠানোর দাবী জানিয়ে তারা প্রাক ভোট বর্জন করেন। কিন্তু উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি মোঃ রেজবি-উল করিব জোমাদ্দার তাদের দাবী উপেক্ষা করে প্রাক ভোট দেন। ওই ভোটে সাবেক শিবির নেতা মোঃ আব্দুর রাজ্জাক হাওলাদার ৩৮ এবং আওয়ামীলীগ নেতা আবু জাফর খোকন ৩৭ ভোট পান। শিবির নেতার কাছে আওয়ামীলীগ নেতা হেরে যান। অভিযোগ রয়েছে উপজেলা আওয়ামীলীগ সাংগঠনিক সম্পাদক অনু প্রবেশকারী শিবির নেতা মোঃ আব্দুর রাজ্জাক হাওলাদার টাকা দিয়ে তৃণমুল নেতাদের ভোট কিনে বিজয়ী হয়েছেন। শিবির নেতা বিজয়ী হওয়ায় দলীয় নেতা কর্মীদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে। প্রায়াত কাসেম হাওলাদারের ছেলে আব্দুর রাজ্জাক হাওলাদার ছাত্রজীবন থেকে ছাত্র শিবির রাজনীতির সাথে জড়িত। তিনি ঢাকার সুত্রাপুর থানার ছাত্রশিবির সভাপতি ছিলেন এমন দাবী পঁচাকোড়ালিয়া তিন ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ সভাপতি মোঃ জালাল উদ্দিন আহম্মেদ, কাইয়ুম তালুকদার ও কুদ্দুস তালুকদারের। তারা অভিযোগ রয়েছে, ২০০১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ছোটবগী বাজার এলাকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নৌবহর নোঙ্গর করলে শিবির নেতা আব্দুর রাজ্জাকের নেতৃত্বে স্প্রীট বোর্টে লাঙ্গল ছুড়ে মারেন। অল্পের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রক্ষা পায়। ২০০৩ সালে ছাত্র শিবির রাজনীতি ছেড়ে তালতলী উপজেলা আওয়ামীলীগ রাজনীতিতে যুক্ত হন। অর্থের বিনিময়ে ভাগিয়ে নেন উপজেলা আওয়ামীলীগ সাংগঠনিক সম্পাদক পদ। ২০১৮ সালে অনু প্রবেশকারীর তালিকায় তার নাম অন্তভুক্ত হয়।
তালতলী উপজেলা যুবলীগ যুগ্ম আহবায়ক মোঃ শামীম পাটোয়ারী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নৌবহরে লাঙ্গল ছুড়ে মারা ব্যক্তি আব্দুর রাজ্জাক আজ আওয়ামীলীগ নেতা। আমরা যারা প্রকৃত আওয়ামীলীগ করি তারা হাইব্রীড আওয়ামীলীগের কাছে অসহায়। অনু প্রবেশকারী আব্দুর রাজ্জাকের নাম মনোনয়ন তালিকা থেকে বাদ দিয়ে কেন্দ্রে পাঠাতে জেলার নেতৃবৃন্দের কাছে দাবী জানান তিনি।
উপজেলা আওয়ামীলীগ সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ আব্দুর রাজ্জাক হাওলাদার টাকা দিয়ে ভোট কেনার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনা সকল অভিযোগ মিথ্যা। তিনি আরো বলেন, আমার যখন কোন বিজয় হয় তখন আমার প্রতিপক্ষরা আমাকে রাজনৈতিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করতে নানা অপপ্রচার চালায়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নৌবহরে হামলার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ ঘটনার কোন সত্যতা নেই।
তালতলী উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক মোঃ তৈফিকুজ্জামান তনু বলেন, ২০০১ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আব্দুর রাজ্জাক হাওলাদার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নৌবহরে লাঙ্গল ছুড়ে মারেন। এরপর আওয়ামীলীগ ক্ষমতার আসার পরে তিনি ফাঁক ফোকর দিয়ে আওয়ামীলীগ রাজনীতির সাথে যুক্ত হন। তার নাম অনুপ্রবেশকারীর তালিকায় রয়েছে।
তালতলী উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি মোঃ রেজবি-উল কবির জোমাদ্দারের কাছে এ বিষয়ে জানতে তাকে বারবার মুঠোফোনে (০১৭১১৯৭৯০৯৫) যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
© All rights reserved 2022 © aponnewsbd.com
Leave a Reply