সোমবার, ১৬ মে ২০২২, ০৯:৫৩ পূর্বাহ্ন
আমতলী প্রতিনিধিঃ শত বছরের আমতলীর প্রবাহমান কাউনিয়া খালের ইজারা কার্যক্রম বন্ধ করে উন্মুক্ত রাখার দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে কৃষকরা। শনিবার দুপুরে খাল সংলগ্ন এলাকায় কয়েকশত কৃষক এ বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন। ওই দিন দুপুরে উপজেলা কৃষি অফিসার সিএম রেজাউল করিম খালটি পরিদর্শন করে ইজারা কার্যক্রম বন্ধের আশ্বাস দেন।
জানাগেছে, উপজেলার চাওড়া ইউনিয়নের মধ্যভাগে শত বছরের প্রবাহমান কাউনিয়া খাল। ১৯৮০ সালে ওই খালের কাউনিয়া এলাকায় সড়ক নির্মাণে বাঁধ দেয়া হয়। বাঁধের বাহিরের অন্তত ২০ কিলোমিটারের একটি অংশ পায়রা নদীর সাথে প্রবাহমান রয়েছে। ওই এলাকার পাঁচ শতাধিক কৃষক কৃষি কাজে এবং কয়েশ’শ পরিবার গৃহস্থালী কাজে খালের পানি ব্যহবার করে আসছে। ওই খালের পানি ব্যবহার করে কৃষকরা কোটি কোটি টাকার ফসল উৎপাদন করে বলে জানান কৃষকরা। গত ১০ বছর ধরে ওই খালের কচুরীপানায় ভরপুর ছিল। কচুরীপানার কারনে খালের পানি গৃহস্থলী কাজে ব্যবহান অনুপোযোগী হয়ে পরে। গত মার্চ মাসে স্থানীয় কৃষকরা খালটি কচুরী মুক্ত করে। এদিকে একটি প্রভাবশালী মহল ওই প্রবাহমান খালটি বদ্ধ জলাশয় দেখিয়ে ১৩.৭৭ একর জমি এ বছর ইজারা নিয়ে মাছ চাষ করতে বরগুনা জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করেন। বরগুনা জেলা প্রশাসক আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে খালটি সরেজমিনে পরিদর্শন করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশ দেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার একেএম আব্দুল্লাহ বিন রশিদ খালের অবস্থা জানিয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার সিএম রেজাউল করিমকে সরেজমিনে পরিদর্শন করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। শনিবার উপজেলা কৃষি অফিসার সরেজমিনে খালটি পরিদর্শনে যান। খবর পেয়ে খাল পাড়ের কয়েকশত কৃষক খালের ইজারা কার্যক্রম বন্ধ করে উন্মুক্ত রাখার দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন চাওড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ আখতারুজামান বাদল খাঁন, উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি মোঃ মাহবুবুল ইসলাম, ইউপি সদস্য রুহুল আমিন, কৃষক বশির উদ্দিন মৃধা, দেলোয়ার গাজী ও ফরিদা বেগম। কৃষকরা বলেন, খালটি ইজারা দেয়া হলে কোটি কোটি টাকার কৃষি উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাবে। ওই বিক্ষোভ সমাবেশে উপজেলা কৃষি অফিসার সিএম রেজাউল করিম কৃষকদের ইজারা কার্যক্রম বন্ধের আশ্বাস দেন।
কৃষক বশির উদ্দিন মৃধা বলেন, শত বছরের প্রবাহমান কাউনিয়া খাল। এ খালের পানি ব্যবহার করে এলাকার কৃষকরা ফসল উৎপাদন করে এবং খালের দুইপাড়ের কয়েক’শত পরিবার গৃহস্থলী কাজে পানি ব্যবহার করছে। খালটি ইজারা দিলে কৃষকরা চরম ক্ষতিগ্রস্থ হবে। এ খালের ইজারা কার্যক্রম বন্ধের দাবী জানান তিনি।
চাওড়া ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ আখতারুজ্জামান বাদল খাঁন বলেন, পাঁচ শতাধিক কৃষক এ খালের পানি ব্যবহার করে কোটি কোটি টাকার ফসল উৎপাদন করছে। এ প্রবাহমান খালটি একটি প্রভাবশালীমহল বদ্ধ জলাশয় দেখিয়ে মাছ চাষ করতে ইজারা নিতে পায়তারা চালাচ্ছেন। ওই খাল ইজারা দিলে কৃষি কাজ ব্যহত হবে। বন্ধ হয়ে যাবে কোটি কোটি টাকার ফসল উৎপাদন। ক্ষতিগ্রস্থ হবে কয়েকশত কৃষক। দ্রুত এ খালের ইজারা কার্যক্রম বন্ধ করে খালটি উন্মুক্ত রাখার দাবী জানান তিনি।
উপজেলা কৃষি অফিসার সিএম রেজাউল করিম বলেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নির্দেশে কাউনিয়া খালের এলাকা পরিদর্শন করেছি। কৃষি কাজের স্বার্থে খালটি উন্মুক্ত রাখা জরুরী। ওই খালটি কোন মতেই ইজারা দেয়া যাবে না। ইজারা কার্যক্রম বন্ধে উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে প্রতিবেদন দেয়া হবে।
Leave a Reply