শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:০৭ পূর্বাহ্ন
গোফরান পলাশঃ
করোনা ভাইরাসের সংক্রমন এড়াতে পটুয়াখালীতে লকডাউনে কর্মবিমূখ হয়ে পড়া অসহায় পরিবারের সহায়তায় স্থানীয় প্রশাসনের সাথে এগিয়ে এসেছে বেসরকারি সংস্থা সহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন। এসব হতদরিদ্র পরিবার গুলোর জন্য চাল, ডাল, তেল, আলু, লবন, সাবান সহ নিত্য প্রয়োজনীয় পন্য নিয়ে বাড়ী বাড়ী যাচ্ছেন তারা। উপজেলা প্রশাসন সূত্র জানিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে দুর্যোগ ও ত্রান মন্ত্রনালয়ের অর্থায়নে উপকূলীয় কলাপাড়ায় ২০০০টি হত দরিদ্র পরিবারকে খাদ্য সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। জেলার অন্যান্য উপজেলা গুলোতেও সরবরাহ করা হচ্ছে এ খাদ্য সহায়তা। শনিবার থেকে এ কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
এছাড়া এসএসসি ২০১৩ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা এক শ’ হতদরিদ্র পরিবারকে চাল, ডাল, তেল, লবণ দিয়েছে। বেসরকারি সংস্থা পাথওয়ে দিয়েছে গনমাধ্যমকর্মী ও চিকিৎসকদের মাস্ক। বেশ কয়েকটি শিক্ষার্থীদের গ্রুপ নিজেদের উদ্যোগে তহবিল গঠন করে এগিয়ে এসেছে লক ডাউনে কর্ম বিমূখ হয়ে পড়া অসহায় মানুষের পাশে। একটি সামাজিক সংগঠন লকডাউনের পর থেকে পৌরশহর, মৎস্য বন্দর ও পর্যটন শহরে অবস্থানরত মানসিক প্রতিবন্ধীদের রান্না করা খাবার সরবরাহ করছে। এছাড়া করোনা আতংকে লকডাউন হয়ে থাকা উপার্জনহীন অসহায় মানুষের পাশে এগিয়ে এসেছে সাংবাদিকদের সংগঠন সহ বেশ ক’টি সামাজিক সংগঠন।
কলাপাড়া ইউএনও আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহিদুল হক বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে দুর্যোগ ও ত্রান মন্ত্রনালয়ের অর্থায়নে উপকূলীয় কলাপাড়ায় ২০০০টি হত দরিদ্র পরিবারকে খাদ্য সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। শনিবার থেকে এ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এতে ১২টি ইউনিয়ন ও দু’টি পৌরসভায় ২০০০ টি পরিবারকে এ সহায়তা তুলে দেয়া হবে। এতে প্রতি অসহায় পরিবার পাচ্ছে ১০কেজি চাল, ২ কেজি আলু, ১ কেজি ডাল, ২ কেজি লবন, ৫০০ মি.লি. তেল ও একটি স্যাভলন সাবান।
এদিকে পটুয়াখালীতে জ¦র-সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত দুই মৃত ব্যক্তির বসতঘর লকডাউন করেছে প্রশাসন। রবিবার দুপুর ১২টায় পৌর সভার টাউন কালিকাপুর এলাকা ও বহালগাছিয়া এলাকার দুইটি বাড়ি লাল পতাকা উড়িয়ে লকডাউন ঘোষণা করে এলাকাবাসীকে সতর্ক করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লতিফা জান্নাতি। তবে ওই পরিবার গুলোকে খাদ্য সামগ্রী প্রদান করেছে জেলা প্রশাসন।
শনিবার রাতে এলাকাবাসীর কাছ থেকে খবর পেয়ে স্বাস্থ্য কর্মীরা গিয়ে মরদেহ থেকে নমুনা সংগ্রহ করার পর আইডিসিআর এ পাঠানো হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন সিভিল সার্জন ডা. মো. জাহাঙ্গীর আলম।
নিহত আব্দুর রশিদ ভোলা জেলার লালমোহন উপজেলার সাতবাড়িয়া গ্রামের মৃত কেরামত আলীর ছেলে। পৌর সভার টাউন কালিকাপুর এলাকার মাতবর বাড়ী সংলগ্ন তার মেয়ের বাড়ীতে সম্প্রতি বেড়াতে এসেছিলেন রশিদ। এছাড়া জাকির হোসেন শহরের বহালগাছিয়া এলাকার নাগরিক।
পটুয়াখালী সদর থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমান জানান, সদর উপজেলার টাউন বহালগাছিয়া এলাকার মোঃ জাকির হোসেন নামের ওই ব্যক্তিকে শনিবার শেষ বিকালে পটুয়াখালীর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল থেকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসোলেশনে ভর্তির পর রাতে সে মারা যায়।
বরিশাল মেডিকেলের পরিচালক ডাঃ মোঃ বাকির হোসেন সাংবাদিকদের জানান, তিনি শ্বাসকষ্ট, জ্বর ও সর্দিকাশি নিয়ে বরিশাল ভর্তি হয়েছিল। তবে তার
মৃত্যু করোনায় কিনা সেটা বলা যাচ্ছেনা কারণ বরিশালে করোনা ভাইরাস পরীক্ষার কোন ব্যবস্থা নাই।
পটুয়াখালী সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ জাহাঙ্গীর আলম জানান, পটুয়াখালীতে গত ২৪ ঘন্টায় ২১ জন সহ মোট ৭০২ জনকে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। তন্মধ্যে ৩৮৪ জনের কোয়ারেন্টিন শেষে ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে। জেলায় এখনও ৩১৮ জন হোম কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন। এছাড়া আইইডিসিআর এ ইতোপূর্বে প্রেরিত দু’জনের নমুনার রেজাল্টে নেগেটিভ এসেছে। শনিবার রাতে অপর একটি নমুনা সংগ্রহ করে আইইডিসিআর এ প্রেরন করা হয়েছে।
© All rights reserved 2022 © aponnewsbd.com
Leave a Reply