শুক্রবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৩:০৯ অপরাহ্ন
বিশেষ প্রতিবেদকঃ
কুয়াকাটার আবাসিক হোটেলে তিন নারী সহ এক সাদা পোষাকের পুলিশ সদস্যকে আটকের পর ছেড়ে দিল মহিপুর থানা পুলিশ। শনিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে কুয়াকাটা ট্যুরিষ্ট পুলিশ ক্যাম্পের বিপরীতে অবস্থিত জাহাঙ্গীর মাষ্টারের নাম বিহীন হোটেল থেকে ওই তিন নারী সহ পুলিশ সদস্যকে স্থানীয়রা আটক করে মহিপুর থানা পুলিশে সোপর্দ করে। তবে এ নিয়ে মহিপুর ওসি’র বক্তব্য তিনি এ বিষয়ে অবগত নন। কিন্তু কলাপাড়া সদর সার্কেলের দায়িত্বরত অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বললেন তিঁনি স্থানীয় সূত্রে বিষয়টি জেনেছেন। তদন্ত চলছে তাতে পুলিশ সদস্যের নৈতিক স্খলনের বিষয়টি উঠে এলে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য সুপারিশ করা হবে।
এর আগে শনিবার সন্ধ্যা অনুমান সাড়ে ৬টার দিকে কুয়াকাটা ট্যুরিষ্ট পুলিশ ক্যাম্পের বিপরীতে অবস্থিত জাহাঙ্গীর মাষ্টারের নাম বিহীন হোটেলে চিৎকার
সোরগোল শুনতে পান স্থানীয়রা। খালের ওপাড়ে অবস্থিত আবাসিক হোটেলটির একটি কক্ষে তিন নারী সহ এক পুরুষকে দেখতে পান স্থানীয়রা। বিষয়টি সন্দেহজনক হিসেবে স্থানীয়দের কাছে প্রতীয়মান হওয়ার পরও হোটেল দেখাশুনাকারী আরিফ (২২) মুখ না খুললে উত্তম মধ্যম দেয়া হয় তাকে। এরপর মুখ খুলতে শুরু করে আরিফ। প্রকাশ হয়ে পড়ে ওই তিন নারী বারবনিতা ও উপস্থিত পুরুষ একজন পুলিশ কনেষ্টবল। যার কানেকশনে মনোরঞ্জনে কুয়াকাটায় আসে তারা। এরপর স্থানীয়দের সংবাদে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় এসআই সাইদুল ও এসআই মাহবুবের নেতৃত্বে মহিপুর থানা পুলিশ। আটককৃতদের নিয়ে থানায় ফেরে পুলিশ। শুরু হয় মহিপুর ওসি’র নাটকীয়তা। রাতেই রহস্যজনক ভাবে ছেড়ে দেয়া হয় অভিযুক্ত পুলিশ কনেষ্টবল এবং তিন বারবনিতাকে। একসময় ওসি গনমাধ্যমকে বলেন কুয়াকাটার কোন হোটেলে কোন পুলিশ সদস্য নারী সহ স্থানীয়দের রোষানলে পড়ার কোন তথ্য তার জানা জানা নেই। তবে আরিফ নামের একজন আবাসিক হোটেল তত্ত্বাবধানকারীকে স্থানীয়রা মারধর করেছে বলে তিনি শুনেছেন। এ বিষয়ে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে কুয়াকাটার নামবিহীন ওই আবাসিক হোটেলের রেজিষ্ট্রার থেকে ওই তিন নারী ও পুলিশ সদস্যের কোন তথ্য জানা যায়নি। এমনকি হোটেল মালিক যাতে কোন তথ্য সংরক্ষন কিংবা প্রকাশ না করে সেজন্য রবিবার সকালে থানায় ডেকে নেয়া হয় তাকে। এছাড়া শনিবার সন্ধ্যায় এসআই সাইদুল ও এসআই মাহবুবের নেতৃত্বে মহিপুর থানা পুলিশের কুয়াকাটার ওই আবাসিক হোটেলে আসা-যাওয়ার সুস্পষ্ট কারন থানার রেজিষ্ট্রারে কিংবা রেকর্ডে যথাযথ ভাবে লিপিবদ্ধ আছে কিনা তাও জানা যায়নি।
তবে নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র জানায়, অভিযুক্ত ওই পুলিশ সদস্য একসময় কলাপাড়ায় কর্মরত ছিল। কলাপাড়া থেকে কিছুদিন আগে সে গলাচিপায় বদলী হয়। বর্তমানে গলাচিপা থেকে তাকে আবার দশমিনায় বদলী করা হয়েছে। এখনও সে দশমিনায় যোগদান করেনি।
এ বিষয়ে মহিপুর থানার ওসি মো: মনিরুজ্জান বলেন, ’কুয়াকাটার কোন হোটেলে কোন পুলিশ সদস্য নারী সহ স্থানীয়দের রোষানলে পড়ার কোন তথ্য তার জানা নেই।
তবে আরিফ নামের একজন আবাসিক হোটেল তত্ত্বাবধানকারীকে স্থানীয়রা মারধর করেছে বলে তিনি শুনেছেন। এ বিষয়ে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
কলাপাড়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আহম্মেদ আলী বলেন, ’স্থানীয়দের মাধ্যমে বিষয়টি তিঁনি জেনেছেন। ওই তিন নারী পাবনা, পিরোজপুর ও রাজশাহী এলাকার। বরিশাল থেকে তারা কুয়াকাটা আসে। এরপর কুয়াকাটার একটি আবাসিক হোটেলে তারা ওঠে। আর পুলিশ সদস্যকে অপর একটি কক্ষে দেখা গেছে বলে জানা যায়। তবে প্রাথমিক ভাবে তাদের আপত্তিকর অবস্থায় পাওয়ার কোন তথ্য জানা যায়নি। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে তাতে পুলিশ সদস্যের নৈতিক স্খলনের বিষয়টি উঠে এলে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য সুপারিশ করা হবে।’
© All rights reserved 2022 © aponnewsbd.com
Leave a Reply