স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে আমতলী থেকে লঞ্চ ছেড়ে গেছে! | আপন নিউজ

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০১:৪৯ অপরাহ্ন

প্রধান সংবাদ
কলাপাড়ায় ১৩ বছরের এক মেয়ের মরদেহ উদ্ধার কাউনিয়ায় প্রাণী সম্পদ সেবা ও প্রদর্শনী মেলা কলাপাড়ায় প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনী ও সেবা সপ্তাহের উদ্বোধন তালতলীর ইউপি চেয়ারম্যানের নগ্ন ও আপত্তিকর ভিডিও ক্লিপ ভাইরাল দীর্ঘদিন বিরতি ও তিব্র গরমের পরে কলাপাড়ায় তিন মিনিটের বৃষ্টি তালতলী উপজেলা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদকের আপত্তিকর ভিডিও ভাইরাল; কমিটি বিলুপ্ত কলাপাড়ায় উচ্ছেদ আতঙ্কে ১৩৬ পরিবারের রাতের ঘুম হারাম; শুধু এক খন্ড খাস জমির দাবি আমতলীতে মুজিবনগর দিবস উদযাপন আমার জন্য ষ্টেইজ ও ফুলের দরকার নেই; আমি গণমানুষের নেতা-গণ সংবর্ধনায় সাংসদ টুকু কলাপাড়ায় ভাইস চেয়ারম্যান পদে জনপ্রিয়তায় এগিয়ে অধ্যাপক ইউসুফ আলী
স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে আমতলী থেকে লঞ্চ ছেড়ে গেছে!

স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে আমতলী থেকে লঞ্চ ছেড়ে গেছে!

আমতলী প্রতিনিধিঃ

ঈদে নাড়ীর টানে পরিবার পরিজনের কাছে আসা মানুষ ঈদ শেষে ঢাকায় যেতে শুরু করেছে। স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই ঈদের ষষ্ঠদিনে ধারণ ক্ষমতার চেয়ে চারগুন অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে বৃহস্পতিবার (৬ আগষ্ট) আমতলী লঞ্চঘাট থেকে এমভি তরঙ্গ-৭ লঞ্চ ছেড়ে গেছে। সরকারী নির্দেশনা উপেক্ষা করে লঞ্চ কর্তৃপক্ষ বরগুনা বিআইডবিøউটিএ’র সহকারী পরিচালক মামুনুর রশিদের সাথে আতাত করে অতিরিক্ত যাত্রী নিচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। বৈরি আবহাওয়া উপেক্ষা করে স্বাস্থ্যবিধি না মেনে ও ধারন ক্ষমতার চেয়ে যাত্রী নেয়ায় করোনার আতঙ্ক বিরাজ করছে যাত্রীদের মাঝে। এছাড়া লঞ্চের ষ্টাফ ও দালালদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা দিয়ে কেবিন ও ডেকের জায়গা কিনতে হচ্ছে এমন অভিযোগ যাত্রীদের।
জানাগেছে, আমতলী-ঢাকা রুটে এমভি তরঙ্গ-৭, এমভি ইয়াদ-১ ও এমভি সুন্দরবন-৭ নামের তিনখানা লঞ্চ সার্ভিস রয়েছে। ঈদ আজহা উপলক্ষে যাত্রীদের সুবিধার জন্য অতিরিক্ত কোন লঞ্চ সার্ভিস চালু করেনি লঞ্চ মালিক কর্তৃপক্ষ। অতিরিক্ত লঞ্চ সার্ভিস চালু না করায় ঢাকামুখী যাত্রীদের করোনার মধ্যে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে লঞ্চ মালিক কর্তৃপক্ষ বরগুনা বিআইডবিøউটিএ’র সহকারী পরিচালক মোঃ মামুনুর রশিদকে ম্যানেজ করে যাত্রী ধারন ক্ষমতার চেয়ে তিনগুন থেকে পাঁচগুন যাত্রী পরিবহন করছে। এমভি তরঙ্গ-৭ লঞ্চ ধারন ক্ষমতা-৭০২ জন যাত্রী কিন্তু নেয়া হচ্ছে অন্তত দুই হাজার পাঁচ’শ থেকে তিন হাজার। এছাড়া সরকারী নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে লঞ্চ কর্তৃপক্ষ। পূর্বে আমতলী-ঢাকা প্রথম শ্রেনীর সিঙ্গেল কেবিনের ভাড়া ছিল এক হাজার, ডাবল কেবিনের ভাড়া দুই হাজার এবং ডেকের যাত্রীদের ভাড়া ছিল ৩’শ টাকা। ঈদের আটদিন পূর্বে কোন কারন ছাড়াই এ ভাড়া বৃদ্ধি করে সিঙ্গেল কেবিন এক হাজার তিন’শ টাকা, ডাবল কেবিন দুই হাজার চার’শ টাকা এবং ডেকের ভাড়া তিন’শ ৫০ টাকা আদায় করছে। এদিকে বৃহস্পতিবার বিকেল চারটার দিকে এমভি তরঙ্গ-৭ লঞ্চটি বৈরি আবহাওয়া ও স্বাস্থ্যবিধি না মেনে অন্তত দুই হাজার পাচ’শ অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে আমতলী লঞ্চঘাট ছেড়ে গেছে। এরপরে লেবুখালী পর্যন্ত মাঝখানে পুরাকাটা, আয়লা পাতাকাটা, ভয়াং, কাকরাবুনিয়া ও পায়রাকুঞ্জু নামের পাঁচটি ঘাট রয়েছে। ওই সকল ঘাট থেকে অন্তত আরো এক হাজার যাত্রী লঞ্চ উঠেছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। ধারন ক্ষমতার চেয়ে চারগুন যাত্রী ওই লে রয়েছে। ওই সকল যাত্রী নিয়েই লঞ্চ টি ঢাকায় পৌছবে। ফলে স্বাস্থ্যবিধি পুরাপুরো বিঘ্নিত হচ্ছে। এতে যাত্রীদের মাঝে করোনা ভাইরাসের আতঙ্ক বিরাজ করছে।
বৃহস্পতিবার আমতলী লঞ্চঘাট ঘুরে দেখাগেছে, এমভি তরঙ্গ-৭ লঞ্চ প্রথম ও দ্বিতীয় তলার ডেক বোঝাই যাত্রীতে। তিল পরিমান ফাঁকা নেই। স্বাস্থ্যবিধির কোন বালাই নেই। লঞ্চ কর্তৃপক্ষ যাত্রীদের ঠাসাঠাসি দেখেও না দেখার ভান করছে। যাত্রীদের মাঝেও নেই কোন সামাজিক দ্রুত্ব ও স্বাস্থ্য সচেতনতা এবং অনেক যাত্রী মাস্কও ব্যবহার করেনি। মানুষ ডেকে জায়গা না পেয়ে লঞ্চের ছাদে ও সম্মুখ্যভাগে অবস্থান করেছে। অনেক যাত্রীকে দাড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। যাত্রীরা অভিযোগ করেন ষ্টাফ ও একটি দালাল চক্র লঞ্চের ডেকে বিছানা বিছিয়ে রাখে। ওই বিছানা তাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা দিয়ে কিনতে হয়েছে।
তালতলী উপজেলার কাজিরখাল গ্রামের মোঃ রুহুল আমিন বলেন, অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই এমভি তরঙ্গ-৭ লঞ্চ ঢাকায় যাচ্ছি। ডেকের চারজনের জায়গা পাচ’শ টাকায় ক্রয় করেছি।
কচুপাত্রা গ্রামের জাহানারা বেগম বলেন, বৈরি আবহাওয়ায় যাত্রী বোঝাই লঞ্চে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঢাকায় যাচ্ছি। কি হয় আল্লায় জানে। তিনি আরো বলেন, লঞ্চে টাকা দিয়ে জায়গা কিনে বসেছি।
কলাপাড়া উপজেলার চম্পাপুর গ্রামের রুবেল বলেন, লঞ্চের ডেকে তিনজনের জন্য এক হাজার দুই’শ টাকায় জায়গা কিনেছি। টাকা না দিলে লঞ্চে জায়গা পাওয়া যায় না।

লঞ্চের যাত্রী আনোয়ার হোসেন বলেন, স্বাস্থ্যবিধি রক্ষায় লঞ্চ কর্তৃপক্ষকে আমি বলে ছিলাম। তারা উল্টো আমাকে ধমক দিয়ে বলে এভাবে গেলে যান, না হয় লঞ্চ থেকে নেমে যান।
এমভি তরঙ্গ-৭ লঞ্চের সুপার ভাইজার নুরুল ইসলাম ঈদের অতিরিক্ত যাত্রী নেয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, ঈদ উপলক্ষে যাত্রীর চাপ বেশী। তাই বেশী নেয়া হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে লঞ্চে বসার কথা বললেও যাত্রীরা তা মানছে না।
আমতলী থানার ওসি মোঃ শাহ আলম হাওলাদার বলেন, ধারণ ক্ষমতার চেয়ে অতিরিক্ত যাত্রী নিতে পারবে না। স্বাস্থ্যবিধি মেনেই লঞ্চে যাত্রী বহন করতে হবে। তিনি আরো বলেন, এর ব্যতিক্রম হলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বরগুনা বিআইডবিøউটিএ’র সহকারী পরিচালক মামুনুর রশিদ লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী নেয়ার বিষয়ে লঞ্চ কর্তৃপক্ষের সাথে তার সংশ্লিষ্টতার কথা অস্বীকার করে বলেন, স্বাস্থ্যবিধি না মেনে ও ধারন ক্ষমতার চেয়ে বেশী যাত্রী বহনের বিষয়টি আমার জানা নেই। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved 2022 © aponnewsbd.com

Design By JPHostBD
error: সাইটের কোন তথ্য কপি করা নিষেধ!!