শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৯:৩৪ অপরাহ্ন
আমতলী প্রতিনিধি।। দাদনের টাকার জন্য বৃহস্পতিবার বিকেলে কীটনাশক ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর হাওলাদারকে (৫৫) মারধর করেছে দাদন ব্যবসায়ী জহিরুল।
শুক্রবার সকালে কীটনাশক ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর হাওলাদারের মরদেহ তার বাড়ির টয়লেটের সামনে থেকে গলায় রশি পেচানো অবস্থায় পুলিশ উদ্ধার করেছে। এ ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে দাদন ব্যবসায়ী জহিরুলকে পুলিশ আটক করেছে। ঘটনা ঘটেছে তালতলী উপজেলার তেতুঁলবাড়িয়া গ্রামে শুক্রবার সকালে।
স্থানীয় সুত্রে জানাগেছে, উপজেলার তেতুঁলবাড়ীয়া গ্রামের জাহাঙ্গীর হাওলাদারের ছেলে আলিম হাওলাদার ২০১৮ সালে দাদন ব্যবসায়ী জহিরুলের কাছ থেকে ৯০ হাজার টাকা দাদন নেয়। ওই টাকা দিয়ে আলিম হাওলাদার জাল নৌকা তৈরি করে সাগরে মাছ শিকারে যান। কিন্তু সাগরে তেমন মাছ ধরা না পরায় ওই দাদনের সুদ-আসল টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হয় আলিম।
দাদনের টাকার জন্য জহিরুল বিভিন্ন সময় আলিমকে চাপ প্রয়োগ করে আসছে। গত তিন বছরে ৯০ হাজার টাকায় সুদে আসলে দুই লক্ষ চল্লিশ হাজার টাকা হয়।
গত দুই বছরে দাদনের দের লক্ষ টাকা সুদ পরিশোধ করেন আলিম। কিন্তু এতে তুষ্ট হয়নি দাদন ব্যবসায়ী জহিরুল। দাদনের আসল ৯০ হাজার টাকার জন্য জহিরুল প্রায়ই জেলে আলিমকে চাপ প্রয়োগ করে আসছে। জহিরুলের নির্যাতন সইতে না পেরে আলিম ৭০ হাজার টাকা মুল্য ধরে তার জাল ও নৌকা জহিরুলকে দিয়ে দেয় এবং বাকী ২০ হাজার টাকা পরিশোধ করতে এক মাসের সময় নেন আলিমের বাবা কীটনাশক ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর হাওলাদার। কিন্তু তারা নির্ধারিত সময়ে ওই টাকা পরিশোধ করতে ব্যর্থ হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে দাদন ব্যবসায়ী জহিরুল ও তার লোকজন বৃহস্পতিবার বিকেলে জাহাঙ্গীর হাওলাদার ও তার ছেলে আলিমসহ পরিবারের চারজনকে মারধর করে।
বৃহস্পতিবার রাতে জাহাঙ্গীর হাওলাদার প্রকৃতির ডাকে ঘরের বাহিরে যান। এরপর আর সে ঘরে ফিরে আসেনি। তাকে অনেক খোজাখজি করে পাইনি এমন দাবী স্ত্রী শেফালী বেগমের। শুক্রবার সকালে জাহাঙ্গীর হাওলাদারের মরদেহ তার বাড়ির টয়লেটের সামনে রশি পেচানো অবস্থায় পরিবারের লোকজন দেখতে পায়।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে তার মরহেদ উদ্ধার করে। পরে মরদেহের ময়না তদন্তের জন্য বরগুনা মর্গে প্রেরন করেছে। এ ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে দাদন ব্যবসায়ী জহিরুল ইসলামকে ওই দিন দুপুরে পুলিশ আটক করে।
নিহতের স্ত্রী শেফালী বেগম বলেন, দাদনের টাকা পরিশোধ করতে না পারায় গতকাল দাদন ব্যবসায়ী জহিরুল ইসলাম আমার ছেলে,স্বামী, পুত্রবধু ও আমাকে মারধর করেছে। রাতে আমার স্বামী প্রকৃতির ডাকে বাহিরে যান। এরপর আর সে ঘরে ফিরেনি। ওই রাতে তাকে অনেক খোজাখুজি করেছি কিন্তু পাইনি। শুক্রবার সকালে গলায় রশি পেচানো অবস্থায় টয়লেটের সামনে আমার স্বামীর মরদেহ দেখতে পাই। আমার স্বামীকে জহিরুল ও তার লোকজন হত্যা করে ফেলে রেখেছে।
তালতলী থানার ওসি মোঃ কামরুজ্জামান মিয়া বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে এটি একটি হত্যাকান্ড। এ ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে দাদন ব্যবসায়ী জহিরুলকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।
© All rights reserved 2022 © aponnewsbd.com
Leave a Reply