আমতলীতে নির্মাণ শ্রমিককে চোর সন্দেহে অমানষিক নির্যাতন; ভিডিও ভাইরাল | আপন নিউজ

শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:৩৬ পূর্বাহ্ন

প্রধান সংবাদ
কলাপাড়ায় জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধে মা-ছেলে ও ছেলের বউকে পি’টি’য়ে জ’খ’ম করার অভিযোগ কাউনিয়ায় কৃষক লীগের ৫২ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন তালতলীতে ভাসুরের বিরুদ্ধে ধ’র্ষ’ণ চেষ্টার মামলায় এলাকায় ক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ তালতলীতে দুই সাংবাদিকসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে সাইবার মামলা আমতলীতে ৬ কেজি গাঁ’জা’সহ বিক্রেতা গ্রে’প্তা’র গলাচিপায় স্ত্রীর দাবীতে দুই দিন ধরে এক তরুনীর অনশন কলাপাড়ায় ১৩ বছরের এক মেয়ের মরদেহ উদ্ধার কাউনিয়ায় প্রাণী সম্পদ সেবা ও প্রদর্শনী মেলা কলাপাড়ায় প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনী ও সেবা সপ্তাহের উদ্বোধন তালতলীর ইউপি চেয়ারম্যানের নগ্ন ও আপত্তিকর ভিডিও ক্লিপ ভাইরাল
আমতলীতে নির্মাণ শ্রমিককে চোর সন্দেহে অমানষিক নির্যাতন; ভিডিও ভাইরাল

আমতলীতে নির্মাণ শ্রমিককে চোর সন্দেহে অমানষিক নির্যাতন; ভিডিও ভাইরাল

আমতলী প্রতিনিধি: আমতলী উপজেলার মধ্য চন্দ্রা গ্রামের নির্মাণ শ্রমিক আব্দুর রাজ্জাক মাতুব্বরকে চোর সন্দেহে ধরে আটকে কবির হাওলাদারসহ তার সহযোগীরা অমানষিক নির্যাতন করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। নির্মাণ শ্রমিক আব্দুর রাজ্জাক মাতুব্বর এমন অভিযোগ করেন। নির্মাণ শ্রমিককে নির্যাতনের একটি ভিডিও বুধবার রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। এতে কবির হাওলাদারসহ ঘটনার সাথে জড়িত সকলের শাস্তি দাবী করেছেন সচেতন মহল। ঘটনা ঘটেছে বুধবার বিকেলে আমতলী পৌর শহরের পুরাতন বাজার এলাকায়।

জানাগেছে, উপজেলার মধ্যচন্দ্রা গ্রামের শানু মাতুব্বরের ছেলে আব্দুর রাজ্জাক মাতুব্বর (২০) মাসিক চুক্তিতে উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক পৌর মেয়র মোঃ মতিয়ার রহমানের নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে কাজ করে আসছে। বুধবার দুপুরে রাজ্জাক পৌর শহরের পুরাতন বাজার এলাকায় ড্রেনে নির্মাণ কাজ করছিল। এ সময় ওই এলাকার মুরগী ব্যবসায়ী কবির হাওলাদার (৩৮), আল ফাহাদ (৪০), মনিরুল ইসলাম (৪০) ও শহীদ গাজী (৪৫) চোর সন্দেহে রাজ্জাককে ধরে নিয়ে যায়। পরে প্রায়াত অমল পালে চালের গোডাউনে আটকে রেখে তাকে বেধরক মারধর করে। হাত পায়ে ধরেও তাদের নির্যাতন থেকে রক্ষা পাইনি রাজ্জাক। প্রায় আড়াই ঘণ্টা আটকে রেখে নির্যাতন চালায় তারা। পরে চালের গোডাউন থেকে কবির হাওলাদার ও তার সহযোগীরা হাবিব হোটেলে নিয়ে পুনরায় মারধর করে এমন দাবী আব্দুর রাজ্জাকের। খবর পেয়ে তার ভাই মোঃ সামসুল আলম মাতুব্বর ঘটনাস্থলে গেলে তাকেও তারা মারধর করে। পরে পুলিশ গিয়ে আব্দুর রাজ্জাককে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। ওই দিন রাতে স্বজনরা তাকে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছে। বর্তমানে তিনি ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ ঘটনায় বুধবার রাতে আমতলী থানায় কবির হাওলাদারকে প্রধান আসামী করে আব্দুর রাজ্জাকের ভাই মোঃ সামসুল আলম মাতুব্বর চারজনের নামে থানায় অভিযোগ দিয়েছেন। এদিকে ওই দিন রাত ১০ টার দিকে চোর সন্দেহে আব্দুর রাজ্জাককে নির্যাতনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পরে নিন্দার ঝড় ওঠে এবং কবির হাওলাদারসহ ঘটনার সাথে জড়িতদের শাস্তি দাবী করেছেন সচেতন মহল। অভিযোগ রয়েছে কবির হাওলাদার আমতলী থানার কিছু পুলিশ সদস্যদের ছত্রছায়ায় মানুষকে বিভিন্নভাবে হয়রানী করে আসছে।

ভিডিও ফুটেজে দেখা যাচ্ছে কবির হাওলাদারসহ ৪-৫ জনে নির্মাণ শ্রমিক রাজ্জাককে লাঠি দিয়ে পায়ের পাতায় পিটাচ্ছে। আর সোবাহান মোল্লার চালের দোকানের টাকা চুরির স্বীকারোক্তি আদায় করতে চাচ্ছে। কিন্তু নির্মাণ শ্রমিক চুরির ঘটনা সাথে জড়িত নয় বলে তাদের হাতে-পায়ে ধরে ও হাত জোর করে অনুনয় বিনয় করছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন বলেন, কবির হাওলাদার থানার কিছু পুলিশ সদস্যের ছত্রছায়ায় থেকে এলাকার বিভিন্ন অপরাধ করে আসছে। দ্রæত তার বিরুদ্ধে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানান তারা।

নির্যাতনের স্বীকার আব্দুর রাজ্জাক মাতুব্বর বলেন, আমি মেয়র মতিয়ার রহমানের নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে কাজ করে আসছি। বুধবার দুপুরে পৌর শহরের পুরাতন বাজার এলাকায় কাজ করতেছিলাম। এমন মুহুর্তে মোঃ কবির হাওলাদারসহ ৪-৫ জনে আমাকে ধরে নিয়ে যায়। তারা আমাকে অমল পালের চালের গোডাউনে আটকে রেখে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর জখম করে।ওই খানে তারা প্রায় দুই ঘন্টা আমার উপরে অমানষিক নির্যাতন চালায়। পরে তারা আমাকে হাবিবের হোটেলে নিয়ে যায়। ওইখানে নিয়ে একটি কক্ষে আটকে রেখে আবারও নির্যাতন করেছে।

এ ঘটনার সাথে জড়িত কবির হাওলাদারের মুঠোফোনে (০১৭৩৩১৫৩৪১৭) যোগাযোগ করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডাঃ তানভির সাহারিয়ার বলেন, দুই পায়েই ফোলা জখমের চিহৃ রয়েছে। তাকে এক্সরে করতে বলা হয়েছে। এক্সরে প্রতিবেদন পেলে বলা যাবে।

আমতলী পৌর মেয়র মোঃ মতিয়ার রহমান বলেন, রাজ্জাক পৌরসভার অস্থায়ী নির্মাণ শ্রমিক। তাকে অমানষিক নির্যাতন করা হয়েছে। এটা মেনে নেয়া যায় না। কবির হাওলাদারসহ ঘটনার সাথে জড়িত সকলের দ্রুত শাস্তি দাবী করছি।

আমতলী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা একেএম মিজানুর রহমান বলেন, বিষয়টি আমি জেনেছি। ভিডিও ফুটেজ দেখে ঘটনার সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে।

আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved 2022 © aponnewsbd.com

Design By JPHostBD
error: সাইটের কোন তথ্য কপি করা নিষেধ!!