শুক্রবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ০১:৩৬ পূর্বাহ্ন
আমতলী প্রতিনিধি: ঘুর্ণিঝড় সিত্রাং আমতলী উপজেলার ৩৪ টি ঘর বিধ্বস্থ ও ২৬৫ টি ঘর আশিংক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। আমন ধান, শীতকালীন সবজি ও পানের বরজের ব্যপক ক্ষতি হয়েছে। মঙ্গলবার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জামাল হোসাইন ও উপজেলা কৃষি অফিসার সিএম রেজাউল করিম। এছাড়াও ১০ টি পুকুর তলিয়ে মাছ ভেসে গেছে এবং গাছপালার ব্যপক ক্ষতি হয়েছে।
জানাগেছে, ঘুর্ণিঝড় সিত্রাং আমতলী উপজেলার ওপর দিয়ে সোমবার রাতে আঘাত হানে। ঘুর্ণিঝড়ে দমকা বাতাস ও ভাড়ী বর্ষণে জনজীবন বিপযস্থ হয়ে পড়ে। এতে উপজেলার ৩৪ টি ঘর বিধ্বস্থ ও ২৬৫ টি ঘর আশিংক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে এবং উপড়ে পরেছে কয়েক হাজার গাছপালা। এতে দুই কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে ধারনা করা হচ্ছে। ভাড়ী বর্ষণে ৫০ হেক্টর আমন ধান ও ৬২ হেক্টর শীতকালিন সবজি খেত পানিতে তলিয়ে ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। এতে আমন ধানে ৪৭ লক্ষ ২৫ হাজার এবং সবজিতে ১ কোটি ৮৯ লক্ষ এবং পানের বরজে ২৫ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানান উপজেলা কৃষি অফিসার সিএম রেজাউল করিম।
অপর দিকে উপজেলার ১০টি পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। এতে ১২ লক্ষ টাকার ক্ষীত হয়েছে বলে জানান উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা হালিমা সরদার। উপজেলায় প্রায় সাড়ে চার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে বিভিন্ন দফতর সুত্রে জানাগেছে।
এর মধ্যে বেশী ক্ষতি হয়েছে গুলিশাখালী, আড়পাঙ্গাশিয়া ও আমতলী সদর ইউনিয়নে।
মঙ্গলবার সরেজমিনে ঘুরে দেখাগেছে, গুলিশাখালী ইউনিয়নের নাইয়াপাড়া গ্রামের অমন চন্দ্রের ঘরের উপর গাছ পড়ে ও উত্তর হরিদ্রাবাড়িয়া কাজেমিয়া মাদ্রাসা বিধ্বস্থ হয়েছে। আমতলী সদর ইউনিয়নের লোচা গ্রামের মোতাহার খান, শহীদ মিয়া ও নাচনাপাড়া গ্রামের রিপনের ঘর বিধ্বস্থ হয়েছে। আড়পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের তারিকাটা গ্রামের গাছ উপড়ে নিজাম প্যাদা ও তারিকাটা গ্রামের রফেজ মৃধার ঘর বিধ্বস্থ হয়েছে এবং কেওয়াবুনিয়া গ্রামের সুজন মিয়ার ঘর ভেঙ্গে পরেছে। এ ছাড়া বিভিন্ন স্থানে সহ¯্রাধীক গাছ উপড়ে পরেছে।
গুলিশাখালী ইউনিয়নের নাইয়াপাড়া গ্রামের অমল চন্দ্র বলেন, মোর সব শ্যাষ অইয়্যা গ্যাছে। গাছ পইর্যা মোর ঘরডা এ্যাকেরাবে ভাইঙ্গা গ্যাছা। তিনি আরো বলেন, ভগবান মোর ঘরের মানষেরে বাচাইছে। নাইলে ঘরের তলে পইর্যা ব্যাবাক্কে মইর্যা যাইতাম।
গুলিশাখালী গ্রামের সমির চন্দ্র ঝালো ও সজল চন্দ্র ঝালো বলেন, ঘুর্ণিঝড়ে পানের বরজ ভেঙ্গে মাটিতে লুটিয়ে পরেছে। এতে অন্তত দুই লক্ষ টাকার ক্ষতিহবে।
আড়পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোসাঃ শোহেলী পারভীন মালা বলেন, ইউনিয়নে ৯টি ঘর বিধ্বস্থ ও ৭ টি ঘর আশিংক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
আমতলী সদর উনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ মোতাহার উদ্দিন মৃধা বলেন, ইউনিয়নের ১৫ টি ঘর বিধ্বস্থ এবং ২৪ টি ঘর আশিংক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
গুলিশখাল ইউপি চেয়ারম্যান এ্যাড.এইচএম মনিরুল ইসলাম মনি বলেন, ১০ টি ঘর বিধ্বস্থ এবং ৩৫ টি ঘর আশিংক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। তিনি আরো বলেন একটি মাদ্রাসা পুরোপুরি বিধ্বস্থ হয়ে মাটির সাথে মিশে গেছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার সিএম রেজাউল করিম বলেন, আমন ধান,শীতকালীন সবজি ও পানের বরজসহ দুই কোটি একষট্টি লক্ষ পঁচিশ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ জামাল হোসাইন বলেন উপজেলায় ৩৪ টি ঘর বিযধ্বস্থ ও ২৬৫ টি ঘর আশিংক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার এসএম সাদিক তানভীর বলেন, ক্ষতিগ্রস্থ তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। দ্রুত জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে পাঠানো হবে।তিনি আরো বলেন, ঘুর্ণিঝড় যা না ক্ষতি করেছে তার চেয়ে বৃষ্টির পানিতে বেশী ক্ষতি করেছে। পানিতে ঘরের পোতা ও গাছের শিকরের মাটি আগলা হয়ে ঘর ও গাছপালা ভেঙ্গে পরেছে।
© All rights reserved 2022 © aponnewsbd.com
Leave a Reply