রিপোর্টঃ এস এম আলমগীর হোসেনঃ
বিপদের রঙ লাল। আর এই লাল রঙেই নিজেকে সাজিয়েছেন বগুড়া সদরের বারপুর উত্তরপাড়া গ্রামের আনোয়ার হোসেন (৫০)। শরীরের পোশাক, টুপি, চশমা, এমনকি সাইকেলের রঙও তার লাল। আনোয়ারের শার্টের পেছনে লেখা, ‘হতে চাই না বিয়ের পাত্রী, হতে চাই স্কুলের ছাত্রী’।
বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুর সাইকেল নিয়ে কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়, কলাপাড়া উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয় ও কলাপাড়া থানায় এসে সাক্ষাৎ করেন।
এবং প্রশাসনকে অনুরোধ করছেন বাল্যবিয়ে ঠেকানোর জন্য।
এসময় আনোয়ার বলছেন, লাল হলো বিপদের চিহ্ন। তিনি বোঝাচ্ছেন যে বাল্য বিয়ে এখনও বিপজ্জনক পর্যায়ে রয়েছে। তাই এই পোশাকে তিনি সাইকেল নিয়ে বেরিয়েছেন। টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পর্যন্ত তিনি এ ব্যাপারে প্রচারাণা শুরু করেছেন। প্রতিটি উপজেলায় গিয়ে স্থানীয় প্রশাসনকে অনুরোধ করছেন বাল্যবিয়ে ঠেকানোর জন্য। আর স্কুলে স্কুলে গিয়ে সচেতন হতে বলছেন ছাত্রীদের।
আনোয়ার হোসেন পেশায় একজন কাঠমিস্ত্রি। গত কয়েকদিন থেকে তিনি বাল্যবিয়ে নিয়ে রাজশাহীতে প্রচারণা চালাচ্ছেন। তার সাইকেলের সামনে দুটি জাতীয় পতাকা। আর পেছনে একটি লাল পতাকা। বাল্যবিয়ের কুফল উল্লেখ করে আনোয়ার বিতরণ করছেন প্রচারপত্র। রবিবার সকালে তাকে রাজশাহী নগরীর বোয়ালিয়া থানার মোড়ে এই প্রচারপত্র বিতরণ করতে দেখা যায়।
আনোয়ার জানান, বাল্যবিয়ের কুফল তিনি খুব উপলব্ধি করেন। নিজের দুই বোনের মেয়ের বাল্যবিয়ে হয়েছিল। একটা করে সন্তান হওয়ার পর সংসার ভেঙে যায়। বাবার মৃত্যুর পর তাদের এখন গার্মেন্টশ্রমিক হিসেবে কাজ করতে হচ্ছে। ভাগনিদের দুঃখ-দুর্দশা তিনি খুব কাছ থেকে দেখেছেন। তাই তিনি মনে করেন, এ ব্যাপারে মানুষের সচেতনতার প্রয়োজন আছে। সে জন্যই সারাদেশে সচেতনতা সৃষ্টিতে তিনি সাইকেল নিয়ে বেরিয়ে পড়েছেন।
আনোয়ার বলেন, প্রশাসনের ভূমিকার আগে প্রত্যেকটি পরিবারকে বাল্যবিয়ের ব্যাপারে সচেতন হতে হবে। তবেই বাল্যবিয়ে মুক্ত বাংলাদেশ হবে। একদিন সবাই সচেতন হবে, বাল্যবিয়ে পুরোপুরি বন্ধ হবে। আমি সেই স্বপ্ন দেখি। আর সাইকেলের প্যাডেল ঘুরিয়ে এ জেলা ও জেলা ঘুরি।
Leave a Reply